ভারত–পাকিস্তান ম্যাচকে আর হাইভোল্টেজ বলা যাবে কি? সাম্প্রতিককালে ভারত যেভাবে একের পর এক ম্যাচে পাকিস্তানকে হেলায় হারাচ্ছে, এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। এশিয়া কাপেও দাপট সেই ভারতের। পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ৭ উইকেটে। দুরন্ত বোলিং করে ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেন কুলদীপ যাদব। পাকিস্তানের ব্যাটারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করলেন ভারতের এই ‘চাইনাম্যান’ বোলার।
পাকিস্তানকে ভাঙার কাজটা শুরু অবশ্য হয়েছিল হার্দিক পান্ডিয়ার হাত ধরে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক সলমন আগা। আগের ম্যাচে দুর্বল ওমানের বিরুদ্ধেও ভাল ব্যাটিং করতে পারেননি পাক ব্যাটাররা। ভারতের বিরুদ্ধেও সেই একই ছবি। এদিনও প্রথম বলেই আউট সাইম আয়ুব (০)। তাঁকে তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়া। সাইম আয়ুবের আউটের রেশ কাটতে না কাটতে আবার ধাক্কা পাকিস্তানের। দ্বিতীয় ওভারে মহম্মদ হ্যারিসকে (৫ বলে ৩) তুলে নেন যশপ্রীত বুমরা।
ভারত–পাকিস্তানের মতো হাইভোল্টেজ ম্যাচে শুরুতেই ২ উইকেট হারালে যে কোনও দলই চাপে পড়ে যাবে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। সাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামানের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে পাকিস্তান। কিন্তু তাঁদের লড়াই যথেষ্ট ছিল না। দলীয় ৪৫ রানের মাথায় ফখর জামানকে (১৫ বলে ১৭) তুলে নেন অক্ষর প্যাটেল। এক ওভার পরেই পাকিস্তান অধিনায়ক সলমন আগাকে (১২ বলে ৩) ফিরিয়ে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে দেন অক্ষর।
আগের ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ব্যাটাররা কুলদীপ যাদবের বলে দিশা খুঁজে পাননি। পাকিস্তানের ব্যাটারদেরও সেই একই অবস্থা। কুলদীপের সামনে একেবারে শোচনীয় অবস্থা। প্রথমে হাসান নওয়াজকে (৭ বলে ৫) তুলে নেন কুলদীপ। পরের বলেই ফেরান মহম্মদ নওয়াজকে (০)। নওয়াজ কুলদীপের গুগলি বুঝতেই পারেননি। পরপর ২ বলে পাকিস্তানের এই দুই ব্যাটারকে তুলে নিয়ে একেবারে আইসিইউ–তে পাঠিয়ে দেন। অন্যপ্রান্তে একা লড়াই করেছিলেন সাহিবজাদা ফারহান (৪৪ বলে ৪০)। তিনিও কুলদীপেক শিকার। শেষ পর্যন্ত শাহিন আফ্রিদির (১৬ বলে অপরাজিত ৩৩) সৌজন্যে কিছুটা মান বাঁচায় পাকিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে তোলে ১২৭/৫। দুরন্ত বোলিং করে ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন কুলদীপ। ১৮ রানে ২ উইকেট অক্ষর প্যাটেলের। ২৮ রানে ২ উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরা।
রান তাড়া করতে নেমে নিজস্বভঙ্গীতে শুরু করেছিলেন অভিষেক শর্মা। প্রথম ওভারেই শাহিন আফ্রিদিকে আক্রমণ শানিয়ে ছন্দ নষ্ট করে দেন। প্রথম বলেই ৪, দ্বিতীয় বলে ৬। ব্যাটে ব্যর্থ হলেও বল হাতে পাকিস্তানকে প্রথম সাফল্য এনে দিয়েছিলেন সাইম আয়ুব। দ্বিতীয় ওভারেই তাঁর বলে স্টাম্পড হন শুভমান গিল (৭ বলে ১০)। চতুর্থ ওভারে তুলে নেন বিধ্বংসী হয়ে ওঠা অভিষেক শর্মাকে। ১৩ বলে ৩১ রান করে তিনি আউট হন।
ভারত ৪১ রানে ৩ উইকেট পর মনে হচ্ছিল ম্যাচে ফিরতে পারে পাকিস্তান। কিন্তু সলমন আগার দলকে সেই সুযোগ দেননি সূর্যকুমার যাদব ও তিলক ভার্মা। ৩১ বল ৩১ রান করে সাইম আয়ুবের বলে তিলক যখন আউট হন, ১২.২ ওভারে ৯৭ রানে পৌঁছে গেছে ভারত। এরপর ভারতে জয় এনে দেন সূর্যকুমার যাদব (৩৭ বলে ৪৭) ও শিবম দুবে (৭ বলে ১০)। ১৫.৫ ওভারে ১৩১/৩ তুলে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। পাকিস্তানের হয়ে সাইম আয়ুব ৩৫ রানে ৩ উইকেট নেন।