১৩ বছর আগে শেষবার কোনও স্বদেশি কোচের হাতে ছিল ভারতীয় সিনিয়র ফুটবল দলের দায়িত্ব। তারপর বছরের পর বছর ধরে বিদেশি কোচের দিয়েই ঝুঁকেছিল ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। বিদেশি কোচের হাত ধরে ভারতীয় ফুটবল যে একটুও এগোয়নি, প্রমাণ হয়ে গেছে। তাই আবার দেশীয় কোচের ওপর আস্থা রাখল ফেডারেশন। খালিদ জামিলের হাতে তুলে দেওয়া হল ভারতীয় সিনিয়র ফুটবল দলের দায়িত্ব। শুক্রবার কোচ হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। স্যাভিও মেডেইরার দায়িত্ব ছাড়ার ১৩ বছর পর খালিদ জামিলই স্বদেশি কোচ।
মানোলো মার্কুয়েজ পদত্যাগ করার পর কার হাতে উঠবে ভারতীয় দলের দায়িত্ব, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। একসময় শোনা যাচ্ছিল বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি জেতানো সঞ্জয় সেনের নাম। এরপর কোচের জন্য বিজ্ঞাপন দেয় ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। বেশ কয়েকজন আবেদন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩ জনকে চূড়ান্ত করেছিল ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটি। খালিদ জামিলের সঙ্গে কোচ হওয়ার লড়াইয়ে ছিলেন স্টিফেন কনস্টানটাইন ও স্টিফান টারকোভিচ। শেষপর্যন্ত খালিদ জামিলকেই বেছে নিল ফেডরেশনের টেকনিক্যাল কমিটি।
এক বিবৃতিতে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘টেকনিক্যাল কমিটির উপস্থিতিতে ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটি ভারতীয় পুরুষ দলের নতুন কোচ খালিদ জামিলের নিয়োগ অনুমোদন করেছে।’ আর্থিক কারণেই ফেডারেশন খালিদ জামিলকে বেছে নিয়েছে। কারণ ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন আর্থিক সঙ্কটে চলছে। কনস্টানটাইন কিংবা টারকোভিচ যে পরিমান বেতন দাবি করেছিলেন, এই মুহূর্তে ফেডারেশনের পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে কবে থেকে খালিদ জামিল কাজ শুরু করবেন, তা অবশ্য ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।
একসময় আইজল এফসি–কে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন খালিদ জামিল। এরপর কলকাতার দুই প্রধান ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানেও কোচিং করান। আইএসএলে নর্থইস্ট ইউনাইটেড এবং জামশেদপুর এফসিকে সাফল্যের সঙ্গেই কোচিং করিয়েছেন। তাঁর এএফসি প্রো লাইসেন্স রয়েছে। ২০২৩–২৪ এবং ২০২৪–২৫ পরপর দু’মরশুমে ফেডারেশনের বর্ষসেরা কোচ নির্বাচিত হয়েছেন। ভারতীয় দলে শেষ স্বদেশি কোচ ছিলেন স্যাভিও মেডেইরা। যিনি ২০১১ সালের অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।
সেপ্টেম্বরে ফিফা আন্তর্জাতিক ম্যাচ উইন্ডোতে ৯ এবং ১৪ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলবে ভারত। ভারতীয় দলের কোচ হিসাবে খালিদের প্রথম পরীক্ষা এই ম্যাচ দুটো। দীর্ঘ দিন ধরে কোচিং করানোয় দেশের সব ফুটবলারকেই হাতের তালুর মতোই চেনেন খালিদ। সুতরাং বিদেশি কোচের মতো তাঁকে অসুবিধায় পড়তে হবে না।