হার দিয়ে কলকাতা লিগ অভিযান শুরু। পরের ম্যাচে জয়। তৃতীয় ম্যাচেও সেই জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ব্যারাকপুরে ঘটনাবহুল ম্যাচে রেলওয়ে এফসি–কে হারাল ২–০ ব্যবধানে। মোহনবাগানের হয়ে গোলদুটি করেন অধিনায়ক সন্দীপ মালিক ও শিবম মুন্ডা।
সোমবার নাটকীয়তায় ভরা মোহনবাগান ও রেলওয়ে এফসি ম্যাচ। দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে হাতাহাতি, কার্ডের ছড়াছড়ি। সব মিলিয়ে দুই দলের ৫ ফুটবলার দেখলেন লালকার্ড, ৬ জন হলুদকার্ড। চূড়ান্ত নাটক ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। মোহনবাগানের মিংমা শেরপাকে ফাউল করেন রেলওয়ে এফসি–র সৌমিক কোলে। মিংমা শেরপা মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। সেই সময় মোহনবাগানের সালাউদ্দিন পেছন থেকে ছুটে এসে সৌমিক কোলেকে ধাক্কা মারেন।
এরপরই দুই দলের ফুটবলাররা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে ছুটে যান দুই দলের ফুটবলার, কোচ, ম্যানেজাররা। তাঁরাও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। ১০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। রেফারি বিমলেন্দু মণ্ডল মোহনবাগানের ফুটবলার সালাউদ্দিন ও ম্যানেজার রাহুল দত্তকে লালকার্ড দেখান। আর রেলওয়ে এফসি–র সৌমিক কোলে, গোলকিপার সুদীপ্ত এবং অভিষেক আইচকেও লালকার্ড দেখান। ম্যাচে ৬ জনকে হলুদ কার্ডও দেখান। ম্যাচের বাকি সময় ১০ জনে খেলে মোহনবাগান। ৯ জনে খেলতে হয় রেলওয়ে এফসি–কে।
ম্যাচের ৬ মিনিটেই অবশ্য সন্দীপ মালিকের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। বল ধরে এগিয়ে গিয়ে রেলওয়ে এফসি–র আগুয়ান গোলকিপার সুদীপ্ত ব্যানার্জির আমাথ ওপর দিয়ে চিপ করেন সালাউদ্দিন। ভেজা মাঠে বলের গতি কমে যায়। রেলওয়ের অভিষেক আইচ বিপন্মুক্ত করার চেষ্টা করেন। আবার বল পেয়ে যান সালাউদ্দিন। তিনি সেন্টার করেন। বল মাটিতে পড়ার আগেই ডানপায়ের জোরালো শটে গোল করেন সন্দীপ। এরপরও বেশ কয়েকটা সুযোগ তৈরি করেও কাজে লাগাতে পারেনি মোহনবাগান।
৩৫ মিনিটে মোহনবাগানের সাইডব্যাক মার্শাল কিস্কুর সঙ্গে সংঘর্ষে বাঁপায়ের হাঁটুতে গুরুতর চোট পান রেলেওয়ে এফসি–র তারক হেমব্রম। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মাঠ থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। কোনও অ্যাম্বুলেন্সও ছিল না। বিরতিতে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তারককে কলকাতার এক নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। দুটি ছাতার সাহায্যে তারকের পা ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে রেল দল। বেশ কয়েকটা আক্রমণও তুলে নিয়ে আসে কিন্তু সমতা ফেরাতে পারেনি। তার মাঝেই ম্যাচে চূড়ান্ত উত্তেজনা, মারামারি। কার্ডের ছড়াছড়ি। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে সাহিল ইনামদারের পাস থেকে মোহনবাগানের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন শিবম মুন্ডা। ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট পেয়ে পঞ্চম স্থানে মোহনবাগান।