ভারোত্তোলনে ইতিহাস গড়লেন বাংলার মেয়ে কোয়েল বর। আমেদাবাদে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে তিন–তিনটি বিশ্বরেকর্ড গড়েছে এই বঙ্গতনয়া। মেয়েদের ইয়ুথ ও জুনিয়র বিভাগে ৫৩ কেজি ইভেন্টে সোনা জিতেছে হাওড়ার ধুলাগড়ের কোয়েল। রেকর্ড গড়ার ফাঁকে স্ন্যাচ ও ক্নিন অ্যান্ড জার্কে মোট ১৯২ কেজি ওজন তুলেছে।
প্রথমে স্ন্যাচে ৮৫ কেজি ওজন তোলে কোয়েল। এই বিভাগে আগের কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপের রেকর্ড ছিল ৮৫ কেজি। এরপর ক্লিন অ্যান্ড জার্কে তোলে ১০৭ কেজি। এটাও রেকর্ড। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে আগের রেকর্ড ছিল ১০৫ কেজি। স্ন্যাচ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে মোট ১৯২ কেজি ওজন তোলে। আগের রেকর্ড ছিল ১৮৮ কেজি।
২০১৮ সালে ভারোত্তোলকে যাত্রা শুরু কোয়েলের। তার বাবা পেশায় মাংস বিক্রেতা। কিন্তু শরীরচর্চা করা তাঁর নেশা। শরীর চর্চার জন্য কোয়েলের বাবা নিয়মিত জিমে যেতেন। বাবার সঙ্গেই জিমে যাওয়া শুরু কোয়েলের। জিমেই ভারোত্তোলক শুরু করে কোয়েল। এরপর ২০১৮ সালেই অষ্টম দাসের কাছে প্রশিক্ষণের জন্য মেয়েকে ভর্তি করিয়ে দেন কোয়েলের বাবা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কোয়েলকে। ২০২২ সালে পাতিয়ালাতে আবাসিক শিবিরে যোগ দেন। ধীরে ধীরে নিজেকে উন্নত করে। এখন জাতীয় দলের কোচ বিজয় শর্মার কাছে অনুশীলন করে কোয়েল।
বিশ্বরেকর্ড গড়া প্রসঙ্গে কোয়েল বলে, ‘শরীরচর্চার জন্য বাবার সঙ্গে নিয়মিত জিমে ব্যায়াম করতাম। সেখানে ভারোত্তোলনও হত। দেখতে খুব ভাল লাগত। পরে নিজেই চেষ্টা করি ওজন তোলার। একটা সময় ওজন তোলাটাই খুব প্রিয় হয়ে উঠল। অষ্টম স্যরের কাছে ভারোত্তোলনে হাতেখড়ি। এরপর ২০২২ সালে পাতিয়ালাতে আবাসিক ট্রেনিং শুরু করি। এখন উত্তরপ্রদেশে মোদিনগরে জাতীয় শিবিরে রয়েছি।’
বিশ্বরেকর্ড গড়া যে তার লক্ষ্য ছিল, সেকথাও জানিয়েছে কোয়েল। যুব ও জুনিয়র উভয় বিভাগেই জোড়া সোনা জয়ের পর কোয়েল বলে, ‘বিশ্বরেকর্ড গড়াই লক্ষ্য ছিল। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরে ভাল লাগছে।’ জাতীয় শিবিরে মীরাবাই চানুর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পেয়েছে কোয়েল। তার কথায়, ‘ডায়েটের ব্যাপারে, টেকনিকের ব্যাপারে চানুদি সবসময় পরামর্শ দেয়।’ এখন কোয়েলের ল৭্য অলিম্পিকে দেশকে পদক এনে দেওয়া।